Shares 2

Bajaj Discover 125 Drum ৩৫,০০০ কিলোমিটার রাইড - বাদল আলী

Last updated on 28-Jul-2024 , By Raihan Opu Bangla

আমার নাম বাদল আলি। আমি পাবানা জেলায় বাস করি। আমি একজন ছাত্র। আজ মূলত আমি আমার আব্বুর Bajaj Discover 125 Drum 2017 বাইকটির রাইডিং অভিজ্ঞতা সম্পর্কে কিছু কথা শেয়ার করব। 

bajaj discover 125 drum review

Bajaj Discover 125 Drum ৩৫,০০০ কিলোমিটার রাইড - বাদল আলী

বাইকটি কেনার কারণঃ আমার আব্বু একজন ব্যবসায়ী। এই কারণে তার নিত্য প্রয়োজন ও যোগাযোগের জন্য একটি বাইক খুব দরকার ছিল। যেহেতু তার প্রতিদিন গড়ে ৫০ - ৬০ কিলোমিটার বাইক রাইড করতে হয় এবং মাস এ প্রায় এক বার ঢাকা থেকে পাবনা যাতায়াত  করতে হয়। তাই তিনি সব দিক থেকে ভাল যেমন মাইলেজ বেশি, লুকস, মেইনটেনেন্স খরচ কম এমন একটি বাইক খুজছিলেন। পছন্দের তালিকাই ছিল Honda Livo 110, Honda Dream Neo, TVS Stryker, Bajaj Discove 125 । পরে আব্বু সব কিছু বিবেচনা করে ডিস্কভার বাইকটি ক্রয় করেন ২০১৭ সালের এপ্রিল মাসে। দাম ছিল ১,৩১,০০০ টাকা এবং বাইকটি ড্রাম ব্রেক ভার্সন ক্রয় করা হয়।

লুকসঃ সবাই মোটামুটি জানেন যে Bajaj Discover 125 Drum বাইকটির লুকস একদম কমিউটিং বাইক এর মত। সব বয়স এর রাইডার এর সাথে বাইকটি মানানসই।

বিল্ড কোয়ালিটিঃ বাজাজ ডিস্কভার ১২৫ বাজাজ কোম্পানির একটি অন্যতম জনপ্রিয় বাইক। এর বিল্ড কোয়ালিটি খুব ভাল। আমি নিজে একবার একটি দুর্ঘটনায় পরেছিলাম। হেডলাইটে সামান্য দাগ ছাড়া কোন ক্ষতি হইনি।

পারফর্মেন্স ও মাইলেজঃ ডিস্কভার ১২৫ সিসি বাইকটিতে একটি ১২৫ সিসি এয়ার কুল্ড ইঞ্জিন ব্যবহার করা হয়েছে । এই ইঞ্জিন প্রায় ১০ বিএইচপি ও ৮ এনএম র্টক উৎপন্ন হয়, যা আমার কাছে যথেষ্ট মনে হয়েছে । বাইকটি নিয়ে আমার কোনো সময়ই পাওয়ার কম মনে হয়নি।আব্বুও পাবনা থেকে ঢাকা হাইওয়ে রাইড এর সময় এর পাওয়ার নিয়ে সন্তুষ্ট। ঢাকা সিটিতেও লো আরপিম এ বাইকটির পাওয়ার আউটপুট ভালোর কাতারে বলা যায়। বাইকটি ৬০+ স্পিড থেকে প্রচুর ভাইব্রেশন করে । এখন পযন্ত বাইকটি থেকে আমি ১১০ কিলোমিটার প্রতি ঘন্টা এর মতো টপ স্পিড পেয়েছি । বাইকটির মাইলেজ খুব ভাল। ঢাকা সিটিতে ৫০-৫৫ কিলোমিটার প্রতি লিটার ও হাইওয়েতে ৬০+ কিলোমিটার প্রতি লিটার পেয়েছি । কিন্তু ভাল মাইলেজ পেতে অবশ্যই ভাল মানের তেল ব্যবহার করতে হবে এবং সঠিক মানের ইঞ্জিন ওয়েল ব্যবহার করতে হবে । 

bajaj discover 125 drum meter console

রাইডিং কম্ফোর্টঃ বাইকট সিটিং পজিশন সর্ম্পুন আপরাইট। ফুটপেগ বাইকের মাঝে এবং হেন্ডেলবারটি উচু । ফলে লং বাইক রাইড এর সময় কোনো ব্যাকপেইন হয়না । আবার ঢাকা সিটির যানজটর্পুণ সড়কেও কোন অসুবিধা হয়না ।

সাসপেনশনঃ বাজাজ ডিস্কভার এর সামনে ব্যবহার করা হয়েছে টেলিস্কোপিক ফ্রোক এবং পিছনে ডুয়েল নাইট্রাস স্পিং সাসপেনশন। এই বাইকের সাসপেনশন খুব ভাল এবং ভাঙা রাস্তা, ভাল রাস্তা সব রকম রাস্তাই ভাল ফিডব্যাক দেয়টায়ার।

ব্রেকঃBajaj Discover 125 Drum 2017 বাইকে সামনে ব্যবহার করা হয়েছে ২.৭৫x সাইজের টায়ার আর পিছনে ব্যবহার করা হয়েছে ৩.০০x সাইজের টায়ার। এর সাথে বাইক থামাতে ব্যবহার হয়েছে ১৩০ এমএম এর ড্রাম ব্রেক। কিন্তু  টায়ার দুইটির গ্রিপ নিয়ে আমি খুব একটা সন্তুষ্ট ছিলাম না। টায়ার গুলো টিউবলেসও ছিল না। ফলে অনেকবার হয়রানি মুলক পরিস্থিতির শিকার হয়তে হয়েছে। এই সমস্যার সমাধানে পরবর্তীতে টায়ার পাল্টে সামনে ৮০ সাইজের টিউবলেস  টায়ার এবং পিছনে ১০০ সাইজের টিউবলেস টায়ার লাগিয়েছি। এখন ব্রেকিং আগের চেয়ে অনেক বেটার।

হেডলাইটঃ বাইকটির হেডলাইট দেখতে স্টাইলিশ। এটি হ্যালোজেন এবং পার্কিং লাইট গুলো ব্লাব। হেডলাইটের আলোর পরিমাণ ভালো কিন্তু হেডলাইটি এসি ফলে আরপিএম এর সাথে লাইটের আলো কম বেশি হয়। আমার মতে লাইটি ডিসি হওয়া উচিত ছিল। এই বাইকটি নিয়ে প্রায় ৩৫০০০+ কিলোমিটার পথ চলা হয়েছে। এই সময়ের অনেক স্মৃতি জরিয়ে আছে বাইকটির সাথে। 

bajaj discover 125 drum black and red

বাইকটির ভালো দিক গুলোঃ

  • বিল্ড কোয়ালিটি ভালো
  • মেইনটেনেন্স খরচ কম এবং পার্টস এর দাম খুব সুলভ।
  • রাইডিং কম্ফোর্ট ভাল
  • সাসপেনশন গুলোর ফিডব্যাক ভালো ও ভাঙা রোডে পিলিওন সহ কোনো প্রব্লেম ছাড়া রাইড করা যায়
  • বাইকটির মাইলেজ খুব ভাল
  • ইঞ্জিনের লো এবং হাই রেঞ্জের পারফর্মেন্স খুবই ভাল
  • ১২৫ সিসি হিসাবে বাইকের টপ স্পিড সন্তোষজনক

বাইকের কিছু খারাপ দিকঃ

  • প্রথমত ৬০+ কিলোমিটার প্রতি ঘন্টা স্পিড এরপর থেকে অনেক ভাইব্রেশন হয়
  • বাইকের সাথের স্টক CEAT টায়ার এর গ্রিপ খুব একটা ভাল না
  • বাইকটির মাইলেজ ভাল কিন্তু ট্যাংকে ৮ লিটার তেল ধারণ করে এবং আমার মতে ট্যাংকটি একটু বড় করা উচিত
  • হেডলাইটি ডিসি করা উচিত

সকল বাইকের ভাল খারাপ দিক আছে। তেমন এই বাইকটির ও কিছু খারাপ ও ভাল দিক আছে। সব মিলিয়ে বলা যায় বাজাজ ডিস্কভার ১২৫ সিসি আমাদের দেশের মধ্যে খুব ভাল একটি বাইক। আমাদের সবার উচিত ফুল ফেস হেলমেট পরে বাইক চালাবেন।

লিখেছেনঃ বাদল আলী

আপনিও আমাদেরকে আপনার বাইকের মালিকানা রিভিউ পাঠাতে পারেন। আমাদের ব্লগের মাধ্যেম আপনার বাইকের সাথে আপনার অভিজ্ঞতা সকলের সাথে শেয়ার করুন! আপনি বাংলা বা ইংরেজি, যেকোন ভাষাতেই আপনার বাইকের মালিকানা রিভিউ লিখতে পারবেন। মালিকানা রিভিউ কিভাবে লিখবেন তা জানার জন্য এখানে ক্লিক করুন এবং তারপরে আপনার বাইকের মালিকানা রিভিউ পাঠিয়ে দিন articles.bikebd@gmail.com – এই ইমেইল এড্রেসে।

Published by Raihan Opu Bangla