Shares 2

Bajaj Discover 125 আমার ৩টি বাইকের মধ্যে এটিই সেরা - সঞ্জীব

Last updated on 26-Jul-2024 , By Raihan Opu Bangla

একজন বাইকার এর পক্ষ থেকে সবাইকে জানাই অনেক শুভেচ্ছা ও অভিনন্দন। আমি সঞ্জীব । বর্তমানে আমি ৩টি বাইক ব্যবহার করি তার মধ্যে একটি বাইক হচ্ছে Bajaj Discover 125 আজ আমি এই বাইকটি নিয়ে আমার কিছু অভিজ্ঞতা শেয়ার করবো।bajaj discover 125 black color headlight front tire and rideআমার ৩টি বাইকের মধ্যে বেশিরভাগ সময় যেটা দিয়ে রাইড করি সেটার নাম Bajaj Discover 125 । লং ট্যুর দেয়ার সময় আমি এই বাইকটি ব্যবহার করি। অফরোড এ চালাতে আমি আমার Hero Glamour ব্যবহার করি। মাঝে মাঝে আমার ছোট বাইক Kawasaki kw-80 চালাই। আমার গ্রাম কানিহাটি চা বাগান, শমসেরনগর, জেলা - মৌলভীবাজার। 


আমার জীবনের প্রথম বাইক ছিলো Kawasaki kw-80 যেটা ১৬ই জুলাই ২০০৯ সালে মৌলভীবাজার বেঙ্গল মটরস থেকে ক্রয় করি। বাইকটি ৮০ সিসি ছোট বাইক। বাবা সিদ্ধান্ত নেন যে ছোট বাইক নিবেন। বাইকটার ইঞ্জিন ভালো ছিলো বেশ স্মুথ সাউন্ড ছিলো এবং পিছনে ক্যারিয়ার সহ পিলিয়ন সিটটা অনেক জায়গা ছিলো বিধায় আমার বাবা সেটা পছন্দ করে।


এখন বলি আমার Bajaj Discover 125 বাইক এর কিলোমিটার নিয়ে। আমি সম্পূর্ণ রিভিউতে আমার Bajaj Discover 125 বাইকটির ব্যাপারে বলবো । আমার বাইকটি গত ৩১ শে মে ২০১৮ সালে কিনেছিলাম। এখন পর্যন্ত ১৭৮০০+ কিলোমিটার চালিয়েছি। সর্বপ্রথম বলতে হয় যে আমার হিসাবে সবচেয়ে মজার জার্নি হলো বাইক জার্নি। কোন ঝামেলা নাই। জ্যাম এ খুব বেশি সময় অপচয় হয়না ।


কোথাও যেতে হলে পরিবহন নিয়ে ঝামেলা নাই। যখন যেখানে ইচ্ছে যেতে পারি । গন্তব্যে পৌঁছাতে অনেক সময় বাচে। বাইক আমার কাছে আমার ভালোবাসা আমার বন্ধু। তাকে নিয়েই ছুটে চলি।bajaj dicover 125 headlight indicator and crush guard

Click To See Bajaj Discover 125 Disc Price In Bangladesh


অনেক স্বপ্ন ছিলো ডিসকভার নেওয়ার, বাইকটির বডি, ডিজাইন, কালার, স্মুথ সাউন্ড এবং ৫স্পিড গিয়ার আমাকে তার প্রতি দুর্বল করে দেয়। তাই আমি বাইকটি ক্রয় করি এবং ২ বছর যাবত ব্যবহার করছি। বাইকটি যখন ক্রয় করি তখন সেটির দাম ছিলো ১,৪৮,৫০০ টাকা। আমি সেটি মৌলভীবাজার এইচ আই এস মটরস (ডিলার উত্তরা মটরস) থেকে ক্রয় করি। 


অনেক দিন থেকে বাবাকে বলছিলাম বাইকটি কিনে দিতে। হঠাৎ একদিন সময় দিলেন ৭ দিন পর বৃহস্পতিবার (৩১-০৫-২০১৮) সেদিন কিনে দিবো। বৃহস্পতিবার সকালে আমার মনে নাই প্রায় ভুলে গিয়েছিলাম যে আজকে আমার স্বপ্ন পূরনের ডেট।


হঠাৎ দুপুর ১২ টায় বাবা কল দিলেন বললো বাসায় আসো। বাইক কিনতে যাবো। আমি তো অনেক খুশি। তাড়াতাড়ি গেলাম উনি চেক দিলেন। টাকা তুললাম। একটা সিএনজি ভাড়া করে শো-রুমে গেলাম এবং কিনে নিলাম শখের বাইকটা। নতুন বাইকের সাথে নতুন হেলমেট কিনে সেটা পড়ে বাড়িতে গেলাম। বাইকটি প্রথম বার চালানোর অনুভূতি অসাধারন । 


পছন্দের বাইক এবং সেটার মাঝে অনেক ভালোবাসা লুকিয়ে ছিলো তাই দেরি না করে প্রথম বারেই ২৭ কিলোমিটার রাইড করি । প্রথম অবস্থায় বাইকটি খুব স্মুথ ছিলো। বেশি স্পিড এ তুলিনি। কারণ ব্রেক ইন পিরিয়ড মেনে রাইড করতেছিলাম ।bajaj dicover 125 black color tail light exhustBajaj Discover 125 বাইকটিতে আছে সিংগেল সিলিন্ডার, ২ ভাল্ব, ১২৪ সিসির একটি পাওয়ারফুল ইঞ্জিন । বাইকটি থেকে 11ps @ 8000 RPM এবং 10.8 Nm @ 5500 RPM টর্ক উৎপন্ন করে । বাইকটিতে কিক এবং সেলফ স্টার্ট দেওয়া হয়েছে । ৫টি গিয়ার । লুকস, মাইলেজ, ব্রেকিং, কন্ট্রোলিং সব কিছু মিলিয়ে বাইকটি আমার পছন্দের তালিকায় । 


বাইকটি ৪ বার সার্ভিস করিয়েছি। সার্ভিস গুলো মৌলভীবাজার বাজাজ শো-রুম থেকে করেছি । সবসময় বাইকটির ফুল সার্ভিসিং করাই এবং যখন যে পার্টস গুলো পরিবর্তন করার দরকার করি। নিয়মিত ইঞ্জিন অয়েল পরিবর্তন করি। আমি ২৫০০ কিলোমিটার এর আগে যখন ব্রেক ইন টাইম ছিল তখন ৫৫+ কিলোমিটার প্রতি লিটার মাইলেজ পেয়েছি এবং ব্রেক ইন এর পরে ৫০+ কিলোমিটার প্রতি লিটার মাইলেজ পাচ্ছি । 


মাইলেজ বাইক চালানোর উপর নির্ভর করে। আরপিএম কম থাকলে বেশি মাইলেজ পাওয়া যায়। ক্লাচ কম ধরলেও এবং গিয়ার সিফট পার্ফেক্ট করলে বেশি মাইলেজ পাওয়া যায় । আমি আমার বাইকের নিয়মিত যত্ন নেই । আমি বাইকের চেইন ও চেইন কভার কেরোসিন দিয়ে পরিস্কার করি। চেইন লুব দেই। মাসে প্রায় ৩-৪ বার বাইক ওয়াস করি এরপর পলিশ দেই। ভালো পাম্পের থেকে ফুয়েল নেই । 


ফুয়েল হিসেবে আমি অকটেন ব্যবহার করি । আমার বাইকে আমি ১০০০ কিলোমিটার পর পর ইঞ্জিন অয়েল Mobil Super 20w50 ব্যবহার করি । খুব ভালো পারফরম্যান্স পাচ্ছি।discover 125 black color engine disc brake fuel tank

Click To See All Bajaj Bike Price In Bangladesh


আমি বাইকের ব্রেক সু, ড্রাম রাবার, চেইন স্প্রোকেট কিট, মিটার ক্যাবল, পিকাপ ক্যাবল পরিবর্তন করেছি। পার্টস শো-রুম এ এভেইলেবল পাই। আমি বাইকটি মডিফাই করিনি। টপ স্পিড পেয়েছিলাম ১০৬ কিলোমিটার প্রতি ঘণ্টা ঢাকা সিলেট হাইওয়েতে। পারফর্মেন্স বেশ ভালোই ছিলো।


Bajaj Discover 125 বাইকটির কিছু ভালো দিক -

  • লুকস
  • স্মুথ সাউন্ড
  • কম্ফোর্ট
  • বড় সিট
  • ৫ টি গিয়ার
  • ব্রেকিং খুব ভালো


Bajaj Discover 125 বাইকটির কিছু খারাপ দিক -

  • চেইন দ্রুত লুজ হয়
  • অফরোড এ কোমর ব্যথা করে
  • রেডি পিক আপ নাই
  • থ্রটল রেস্পন্সে শক্তি কম
  • মিটার ক্যাবল তাড়াতাড়ি নষ্ট হয়

dicover 125 engine rider helmetবাইক নিয়ে আমি একদিনে ৪৫৬ কিলোমিটার রাইড করেছি । ৩ বারে ৩০ মিনিট ব্রেক দিয়ে আমি এই ৪৫৬ কিলোমিটার রাইড করেছিলাম। অসাধারন একটা বাইক। অনেক স্মুথ, অনেক ভালো লেগেছে। বুঝা যায়নি এতো দূর ট্যুর দিয়েছি।

হাইওয়েতে বেশ ভালো পারফর্মেন্স পেয়েছি । বাজেট হিসেবে Bajaj Discover 125 বাইকটি অনেক ভালো। যারা কম্ফোর্ট ও স্মুথনেস চান তারা অনেক ভালো রাইড করতে পারবেন। জীবন চলার পথে প্রতিটা রাইডে হেলমেট সহ যাবতীয় সেফটি গিয়ার পরিধান করে বাইক চালাবেন। ধন্যবাদ ।


লিখেছেনঃ সঞ্জীব

আপনিও আমাদেরকে আপনার বাইকের মালিকানা রিভিউ পাঠাতে পারেন। আমাদের ব্লগের মাধ্যেম আপনার বাইকের সাথে আপনার অভিজ্ঞতা সকলের সাথে শেয়ার করুন! আপনি বাংলা বা ইংরেজি, যেকোন ভাষাতেই আপনার বাইকের মালিকানা রিভিউ লিখতে পারবেন। মালিকানা রিভিউ কিভাবে লিখবেন তা জানার জন্য এখানে ক্লিক করুন এবং তারপরে আপনার বাইকের মালিকানা রিভিউ পাঠিয়ে দিন articles.bikebd@gmail.com – এই ইমেইল এড্রেসে।

Published by Raihan Opu Bangla