Shares 2

Bajaj Discover 100 নিয়ে তিন বছর এর পথ চলার গল্প - সবুজ

Last updated on 31-Jul-2024 , By Shuvo Bangla

আমার নাম সাজ্জাদ হোসেন সবুজ। আমার বাসা গাজীপুরের এর চন্দ্রাতে । আমি BUFT বিশ্ববিদ্যালয়ে ১ম বর্ষে পড়ালেখা করছি। আমি একটি Bajaj Discover 100 সি সি বাইক ব্যবহার করতেছি । আজ এই Bajaj Discover 100 বাইকটি নিয়ে আমি আমার কিছু  অভিজ্ঞতা শেয়ার করবো।

Bajaj Discover 100 নিয়ে তিন বছর এর পথ চলার গল্প

bajaj discover 100 bike picture 

বাইক চালানো আমার একটি নেশার মত । আমি একদিন যদি বাইক না চালাতে পারি ঐদিন আমার মন খারাপ থাকে। আমার নিজের কোন বাইক ছিলনা, তাই আমি আমার আব্বুর বাইক দিয়েই আমার বাইকিং জীবন শুরু করেছি ।

আমার আব্বুর Bajaj Discover 100 বাইকটি এখন আমার নিজের বাইক। "বাইক" শব্দটি ভালোবাসার একটা নাম । আমি Bajaj কোম্পানির Bajaj Discover 100 বাইকটি ব্যবহার করছি। বাইকটি নিকটবর্তী কালিয়াকৈরে অবস্থিত বাজাজ শোরুম থেকে কিনেছিলাম। বাইকটি কিনেছি ৩ বছর ৭ মাস হয়েছে। বাইকটির প্রথম ২ বছর আমার বাবা চালায়, তারপর তিনি সেটা আমাকে দিয়ে দেন।

bajaj discover 100 bike 

আমি গত ১ বছর ৭ মাস যাবৎ Bajaj Discover 100 বাইকটি চালাচ্ছি। যদিও ২ বছর ব্যবহৃত তারপরও বাইকটি অনেক ভালো পারফর্মেন্স দিয়েছে একদম নতুন বাইকের মত। বাইকটির কন্ট্রোল অনেক ভাল। ব্রেকিং সিস্টেম এক কথায় অসাধারণ এবং মাইলেজও খুব ভাল। Bajaj Discover 100 বাইকটি আমি কখনো বাজাজ এর সার্ভিস সেন্টারে সার্ভিস করাইনি। প্রথমদিকে আব্বু সাভারের লোকাল গ্যারেজ থেকে সার্ভিস করাতো। সাভারে পার্টস এর দাম তুলনামুলক অনেক কম।

Bajaj Discover 110 New Discover In Bangladesh - Team BikeBD

Bajaj Discover 100 বাইকটির সবচাইতে বড় একটি প্রবলেম হচ্ছে এর ক্ল্যাচপ্লেট কিছুদিন পরপর সমস্যা করে। একারনে বেশ কয়েকবার ক্ল্যাচপ্লেট পরিবর্তনও করেছি। কিন্তু সমস্যা সমাধান হয়নি। পিছনে বেশি ওজনের কোন মানুষ বসা অবস্থায় বাইক কোন গর্তে পরলে সামনের চাকা উঁচু হয়ে যাওয়ার মত অবস্থা হত। বেশ কয়েকজন মেকানিক বলেছিল সাসপেনশন চেঞ্জ করা লাগবে। তবে "আব্দুল্লাহ মোটরস" সফিপুর এর সজীব ভাই নামের একজন মেকানিক সর্বশেষ আমার বাইকের একটি সার্ভিস করে দেয় এবং সমস্যা সমাধান করে দেয়।

bajaj discover 100 cc bike

সেটাই ছিল আমার বাইকের বেস্ট একটা সার্ভিস। সার্ভিসিং এর সকল পার্টস আমি শোরুম থেকে কিনে দিয়েছিলাম। উনি শুধু সেটিং করে দিয়েছে। সার্ভিসটি করানোর পর আমি এ্যাভারেজ মাইলেজ পাচ্ছি ৬০ থেকে ৭০।

Bajaj Discover 100 বাইকটির কিছু ভাল দিক -

  • বাইকটির ব্রেকিং সিস্টেম খুব ভাল।
  • বাইকটির কন্ট্রোল এক কথায় অসাধারণ।
  • ইঞ্জিন কন্ডিশন খুব ভালো।
  • ১ লিটার তেলে ৫০ কিলোমিটারের বেশি মাইলেজ পাওয়া যায়।

Bajaj Discover 100 বাইকটির কিছু খারাপ দিক -

  • প্রথমত বাইকটির হ্যান্ডেল কোয়ালিটি খুব একটা ভাল না।
  • বাইকটির চাকা তুলনামূলক চিকন।
  • হেডলাইটের আলো কম।
  • বাইকটির কালার কোয়ালিটি খুব একটা ভাল না।

আমার Bajaj Discover 100 বাইকটি দিয়ে ঐভাবে কোন লং ট্যুর দেওয়া হয়নি এখনো। লং ট্যুর বলতে ২০০ কিলোমিটার এর একটি ট্যুর দিয়েছি। যেটা ছিল চন্দ্রা, গাজীপুর থেকে যমুনা সেতু, সিরাজগঞ্জ, ভুয়াপুর, গোপালপুর ২০১ গম্বুজ মসজিদ। এই ট্যুরটিতে আমার অনেক অভিজ্ঞতা হয়েছে হাইওয়েতে বাইক রাইডিং এর ব্যাপারে। যদিও আমি অনেক সাবধানেই বাইক চালিয়েছিলাম। রাস্তায় তেমন কোন সমস্যায় পরতে হয়নি আমাকে। ট্যুরে আমাদের সাথে অনেকেই ছিল।

bajaj discover 100 red black colour bike

আমরা গ্রূপ ট্যুরের নিয়ম অনুসরণ করেই পুরোটা পথ রাইড করেছি। আমরা চন্দ্রা থেকে সরাসরি গোপালপুর ২০১ গম্বুজ মসজিদ গিয়েছিলাম। তারপর যমুনা সেতু হয়ে সিরাজগঞ্জ চায়না বাঁধ ঘুরে সরাসরি চন্দ্রা চলে আসি। মাঝে আমরা কিছুটা বিশ্রাম নিয়ে ভূঞাপুরে যাই। তারপর আবার যমুনা সেতুতে কিছুক্ষণ সময় কাটিয়ে আবার রওনা দেই। ২৫,০০০ কিলোমিটার চলার পরেও Bajaj Discover 100 বাইকের পারফরম্যান্স নতুনের মতই আছে। বাইকটি কখনো আমাকে হতাশ করেনি। সবমিলিয়ে বাইকটি থেকে বেস্ট পারফরমেন্স আমি পেয়েছি। Bajaj Discover 100 বাইকটি নিয়ে আমার অনেক আবেগ জড়িয়ে আছে। তাই বাইকটি কখনো আমি বিক্রি করবোনা। আমি আমার এই বাইকটিকে অনেক বেশি ভালোবাসি । বাইকটিকে আমি অনেক যত্ন করি। কিছুদিন পর পর ওয়াশ করি, ইঞ্জিন অয়েল সময়মত পরিবর্তন করি। বাইকটিতে আমি Mobil Super 4T ইঞ্জিন অয়েল ব্যবহার করছি। এই ইঞ্জিন অয়েল-এর পারফরমেন্স অনেক ভাল পেয়েছি আমি। এই পর্যন্ত আমি বাইকটির বেশ কিছু পার্টস পরিবর্তন করেছি। এর মধ্যে প্রথম পরিবর্তন করেছি সামনে এবং পেছনের সাসপেনশন গুলো। এছাড়াও হেডলাইটের ফুল সেটিং এবং লুকিং গ্লাস পরিবর্তন করেছি। সামনের এবং পেছনের টায়ার পরিবর্তন করেছি, সামনের চাকার রিম পরিবর্তন করেছি।

bajaj discover 100 

সবকিছু মিলিয়ে প্রায় দুই বছর পর আমি আমার বাইকের প্রায় ৭০% পার্টস পরিবর্তন করেছি। এই পরিবর্তনের পেছনে কারণ ছিল আমার একটি বড় এক্সিডেন্ট। Bajaj Discover 100 বাইকটিতে আমার তোলা সর্বোচ্চ স্পিড ছিল ৯৬ কিলোমিটার/ঘন্টা।

একটি কথা আমি বিশ্বাস করি, বাইক মানেই দামি বাইক হতে হবে তা নয়। এটা অনেকেই মনে করেন যে, একটি দামি বাইক থাকলেই সে বাইকার। আসলে এই ধারণাটা আমার মতে ভুল। যে যতই ভাল বা খারাপ রাইড করুক না কেন সবাই তার সাধ্য অনুযায়ী বাইক কিনে। সতর্কতা মেনে বাইক চালানোই হচ্ছে প্রকৃত বাইকারের ধর্ম। সবাই ভাল থাকবেন এবং সাবধানে বাইক রাইড করবেন। ধন্যবাদ ।   

লিখেছেনঃ সাজ্জাদ হোসেন সবুজ

আপনিও আমাদেরকে আপনার বাইকের মালিকানা রিভিউ পাঠাতে পারেন। আমাদের ব্লগের মাধ্যেম আপনার বাইকের সাথে আপনার অভিজ্ঞতা সকলের সাথে শেয়ার করুন! আপনি বাংলা বা ইংরেজি, যেকোন ভাষাতেই আপনার বাইকের মালিকানা রিভিউ লিখতে পারবেন। মালিকানা রিভিউ কিভাবে লিখবেন তা জানার জন্য এখানে ক্লিক করুন এবং তারপরে আপনার বাইকের মালিকানা রিভিউ পাঠিয়ে দিন articles.bikebd@gmail.com – এই ইমেইল এড্রেসে।

Published by Shuvo Bangla