Shares 2

সড়ক পরিবহন আইন - ধারা এবং জরিমানা সহ বিস্তারিত

Last updated on 15-Jul-2024 , By Ashik Mahmud Bangla

বহুল আলোচিত নতুন সড়ক পরিবহন আইন ২০১৮ টি গত ১লা নভেম্বর, ২০১৯ থেকে কার্যকর করা হয়েছে। ২০১৯ সালে কার্যকর হওয়া এই নতুন সড়ক পরিবহন আইনে বেপরোয়া গাড়ি চালকের কারনে কারো মৃত্যু হলে চালককে সর্বোচ্চ পাঁচ বছরের কারাদণ্ড বা সর্বোচ্চ পাঁচ লাখ টাকা জরিমানা অথবা উভয় দণ্ডের বিধান রাখা হয়েছে।

সড়ক পরিবহন আইন - ধারা এবং জরিমানা সহ বিস্তারিত

Road Transport Act 2018

সড়ক পরিবহন ও মহাসড়ক বিভাগের সচিব মো. নজরুল ইসলাম স্বাক্ষরিত প্রজ্ঞাপনে বলা হয়, সড়ক পরিবহন আইন ২০১৯ এর ধারা ১ এর উপ ধারা (২) এ দেওয়া ক্ষমতা বলে সরকার ১ নভেম্বর থেকে আইন কার্যকর হওয়ার তারিখ নির্ধারণ করল।

গত বছর ঢাকায় বাসচাপায় দুই ছাত্র-ছাত্রীর মৃত্যুর পর নিরাপদ সড়কের দাবিতে শিক্ষার্থীদের কঠোর আন্দোলনের কারনে আগের আইন কঠোর করে ২০১৮ সালে এই আইনটি করা হয়েছিল। জাতীয় সংসদে পাস হওয়ার পর গত বছরের ৮ অক্টোবর, ২০১৮ এ  সড়ক পরিবহন আইন ২০১৮এর গেজেট প্রকাশ হয়।

নতুন সড়ক পরিবহন আইনে কী কী আছে?

নতুন আইনটি আগের থেকে অনেক বেশি কঠোর, তবে এই আইনে উল্লেখযোগ্য বেশ কিছু বিধান রয়েছে। চলুন সেগুলো সম্পর্কে জেনে নেয়া যাক,

১- সড়কে গাড়ি চালিয়ে উদ্দেশ্য করে কাউকে হত্যা করলে ৩০২ অনুযায়ী মৃত্যুদণ্ডের বিধান রাখা হয়েছে।

২- সড়কে বেপরোয়াভাবে গাড়ি চালালে বা প্রতিযোগিতা করার ফলে দুর্ঘটনা ঘটলে তিন বছরের কারাদণ্ড অথবা তিন লাখ টাকা অর্থদণ্ড বা উভয় দণ্ডে দণ্ডিত করা হবে। আদালত অর্থদণ্ডের সম্পূর্ণ বা অংশ বিশেষ ক্ষতিগ্রস্ত ব্যক্তিকে দেয়ার নির্দেশ দিতে পারবে।

Motor Vehicles Act 2018

৩- মোটরযান দুর্ঘটনায় কোন ব্যক্তি গুরুতর আহত বা প্রাণহানি হলে চালকের শাস্তি দেয়া হয়েছে সর্বোচ্চ পাঁচ বছরের জেল ও সর্বোচ্চ পাঁচ লাখ টাকা জরিমানা। এতে বলা হয়েছে, দণ্ডবিধির ৩০৪ বি ধারায় যাই থাকুক না কেন, কোনো ব্যক্তির বেপরোয়া বা অবহেলাজনিত মোটরযান চালনার কারণে সংঘটিত কোনো দুর্ঘটনায় কোনো ব্যক্তি গুরুতরভাবে আহত বা নিহত হলে চালক সর্বোচ্চ পাঁচ বছরের কারাদণ্ড বা সর্বোচ্চ পাঁচ লাখ টাকা জরিমানা অথবা উভয় দণ্ডে দণ্ডিত হবে।

৪- ড্রাইভিং লাইসেন্স ছাড়া মোটরযান বা গণপরিবহন চালানোর দায়ে ছয় মাসের জেল বা ২৫ হাজার টাকা অর্থদণ্ড বা উভয় দণ্ড দেয়া হয়েছে। ড্রাইভিং লাইসেন্সের বিষয়ে নতুন আইনে বলা হয়েছে, কোনো ব্যক্তি মেয়াদোত্তীর্ণ লাইসেন্স ব্যবহার করে জনসমক্ষে কোনো গাড়ি চালাতে পারবেন না। গণপরিবহন চালানোর জন্য আলাদা অনুমতি লাগবে। চালকের অপরাধের জন্য ১২ পয়েন্ট বরাদ্দ থাকবে। যেকোনো অপরাধের দোষসূচক পয়েন্ট কাটা যাবে। পয়েন্ট শেষ হলে তাঁর লাইসেন্স বাতিল হবে।

অপরাধী ব্যক্তিকে লাইসেন্স দেওয়া হবে না। তবে তাকে যদি আগে থেকে ড্রাইভিং দেওয়া হয়ে থাকলে তা প্রত্যাহার করা হবে। বাসচালকের সহকারী লাইসেন্স ছাড়া গাড়িতে দায়িত্ব পালন করতে পারবেন না। এ ছাড়া রেজিস্ট্রেশন ছাড়া গাড়ি চালানো যাবে না। মোটরযানের মালিকানা পরিবর্তিত হলে তা ৩০ দিনের মধ্যে কর্তৃপক্ষকে জানাতে হবে।

৫- ধারা ১৬ অনুয়ায়ী  নিবন্ধন ছাড়া মোটরযান চালালে ছয় মাসের কারাদণ্ড এবং পঞ্চাশ হাজার টাকা পর্যন্ত জরিমানার বিধান রয়েছে।

৬- ধারা ১৭ অনুয়ায়ী  ভুয়া রেজিস্ট্রেশন নম্বর ব্যবহার এবং প্রদর্শন করলে ছয় মাস থেকে দুই বছরের কারাদণ্ড অথবা এক লাখ থেকে পাঁচ লাখ টাকা অর্থদণ্ড দেয়া হয়েছে।

৭- ধারা ২৫অনুয়ায়ী ফিটনেসবিহীন ঝুঁকিপূর্ণ মোটরযান চালালে ছয় মাসের কারাদণ্ড বা ২৫ হাজার টাকা অর্থদণ্ড বা উভয় দণ্ড দেয়া হয়েছে।

৮- ট্রাফিক সংকেত মেনে না চললে এক মাসের কারাদণ্ড বা ১০ হাজার টাকা অর্থদণ্ড বা উভয় দণ্ড দণ্ডিত করা হবে।

৯- সঠিক স্থানে মোটর যান পার্কিং না করলে বা নির্ধারিত স্থানে যাত্রী বা পণ্য ওঠানামা না করলে পাঁচ হাজার টাকা জরিমানা করা হবে।

১০- গাড়ি চালানোর সময় মোবাইল ফোনে কথা বললে এক মাসের কারাদণ্ড এবং ২৫ হাজার টাকা জরিমানার বিধান রাখা হয়েছে।

১১- একজন চালক প্রতিবার আইন অমান্য করলে তার পয়েন্ট বিয়োগ হবে এবং এক পর্যায়ে লাইসেন্স বাতিল হয়ে যাবে।

১২- গণ পরিবহনে নির্ধারিত ভাড়ার চাইতে অতিরিক্ত ভাড়া, দাবী বা আদায় করলে এক মাসের কারাদণ্ড বা ১০ হাজার টাকা অর্থদণ্ড বা উভয় দণ্ড দণ্ডিত করা হবে।

১৩- আইন অনুযায়ী ড্রাইভিং লাইসেন্সে পেতে হলে চালককে অষ্টম শ্রেনি পাস এবং চালকের সহকারীকে পঞ্চম শ্রেণি পাস হতে হবে হবে। আগে শিক্ষাগত যোগ্যতার কোন প্রয়োজন ছিল না।

১৪- গাড়ি চালানোর জন্য বয়স অন্তত ১৮ বছর হতে হবে। এই বিধান আগেও ছিল।

১৫- হেলমেট না পরলে জরিমানা ২০০ টাকা থেকে বাড়িয়ে সর্বোচ্চ ১০ হাজার টাকা করা হয়েছে।

১৬- সিটবেল্ট না বাঁধলে, মোবাইল ফোনে কথা বললে চালকের সর্বোচ্চ ৫ হাজার টাকা জরিমানা দিতে হবে।

১৭- গণপরিবহনে ভাড়ার চার্ট প্রদর্শন না করলে বা অতিরিক্ত ভাড়া দাবি কিংবা আদায় করলে এক মাসের জেল বা ১০ হাজার টাকা জরিমানা এমনকি চালকের ১ পয়েন্ট কাটা যাবে।

১৮- কনট্রাক্ট ক্যারিজের মিটার অবৈধভাবে পরিবর্তন বা অতিরিক্ত ভাড়া দাবি বা আদায় সংক্রান্ত ধারা ৩৫ এর বিধান লঙ্ঘনের দণ্ড- যদি কোনো ব্যক্তি ধারা ৩৫ এর বিধান লঙ্ঘন করেন, এ জন্য তিনি সর্বোচ্চ ছয় মাসের কারাদণ্ড বা সর্বোচ্চ ৫০ হাজার টাকা অর্থদণ্ড বা উভয় দণ্ডে দণ্ডিত হবেন । চালকের ক্ষেত্রে অতিরিক্ত হিসেবে দোষসূচক ১ পয়েন্ট কাটা হবে।

১৯- সংরক্ষিত আসনে অন্য কোনও যাত্রী বসলে এক মাসের কারাদণ্ড, অর্থদণ্ড বা উভয় দণ্ডের বিধান রাখা হয়েছে।

২০- যদি কোনো ব্যক্তি ধারা ১৪ এর বিধান লঙ্ঘন করেন, এ জন্য তিনি সর্বোচ্চ এক মাসের কারাদণ্ড বা সর্বোচ্চ পাঁচ হাজার টাকা অর্থদণ্ডে দণ্ডিত হবেন। ধারা ১৪ কন্ডাক্টর লাইসেন্স জনিত।

২১- ধারা ২৬ অনুয়ায়ী ট্যাক্স-টোকেন ছাড়া বা মেয়াদোত্তীর্ণ ট্যাক্স-টোকেন ব্যবহার করে মোটরযান চালনা করলে সর্বোচ্চ ১০ হাজার টাকা অর্থদণ্ডে দণ্ডিত হবেন।

২২- ধারা ২৮ অনুয়ায়ী রুট পারমিট ছাড়া পাবলিক প্লেসে পরিবহন যান ব্যবহার করলে সর্বোচ্চ তিন মাসের কারাদণ্ড বা সর্বোচ্চ ২০ হাজার টাকা অর্থদণ্ড বা উভয় দণ্ডে দণ্ডিত হবেন।

২৩- ধারা ২৯ অনুয়ায়ী বিদেশি নাগরিকের বাংলাদেশে প্রবেশের ক্ষেত্রে নিজ দেশের মোটরযান/গণপরিবহণের রুট পারমিট গ্রহণ না করলে সর্বোচ্চ ৩০ হাজার টাকা অর্থদণ্ডে দণ্ডিত হবেন।

২৪- ধারা ৩১ অনুয়ায়ী কোন ব্যক্তি যদি বিনা অনুমতিতে মোটরযানের বাণিজ্যিক ব্যবহার করে তাহলে সর্বোচ্চ তিন মাসের কারাদণ্ড বা সর্বোচ্চ ২৫ হাজার টাকা অর্থদণ্ড বা উভয় দণ্ডে দণ্ডিত হবেন এবং চালকের ক্ষেত্রে অতিরিক্ত হিসেবে দোষসূচক ১ পয়েন্ট কাটা হবে।Traffic Act 2018

FAQ - Frequently Asked Questions

১- নিরাপদ সড়ক আন্দোলন করে হয়েছিলো?

উত্তরঃসড়ক নিরাপত্তার দাবিতে ২৯ জুলাই থেকে ৮ আগস্ট ২০১৮ পর্যন্ত নিরাপদ সড়ক আন্দোলন সংঘটিত হয়েছিলো।

২- নিরাপদ সড়ক আইনের খসড়া করে অনুমোদন করা হয়?

উত্তরঃ ৬ আগস্ট প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার তৃতীয় মন্ত্রীসভা একটি খসড়া ট্রাফিক আইন অনুমোদন করা হয়।

৩- বাংলাদেশে সড়ক দুর্ঘটনায় কি পরিমান মানুষ আহত অথবা নিহত হয়?

উত্তরঃ ২০১৫ সাল থেকে ২০১৮-র জুলাই পর্যন্ত সারাদেশে সড়ক দুর্ঘটনায় নিহত হয় ২৫ হাজার মানুষ এবং আহত প্রায় ৬২ হাজার।

৪- বাইকে অনুমতি নিয়ে ফগ লাইট কি লাগানো যাবে?

উত্তরঃ অনেকেই বলছেন বি আর টি এ থেকে বাইকে ফগ লাইট ব্যবহার (মোডিফিকেশন) এর অনুমতি নেয়া যায়।

এ বিষয়ে জানতে আমরা টিম বাইক বিডি গতকাল গিয়েছিলাম মিরপুর, ঢাকা বি আর টি এ। ইনফরমেশন বুথ থেকে জানানো হয়েছে এরকম কোন অনুমতি এর ফরম্যাট নেই বি আর টি এ তে, আপনি শুধু মাত্র ইঞ্জিন ও রং পরিবর্তন করতে পারবেন, অন্য কিছু না।

তবে আশার আলো হচ্ছে আগামী সপ্তাহে এই নিয়ে কিছু জানা যেতে পারে, তাই আগামী সপ্তাহে যোগাযোগ করতে বললেন।

এই ফগ লাইট এর অনুমতি নেয়ার বিষয়ে বি আর টি এ থেকে, কেউ যদি আরও বিস্তারিত ও সুস্পষ্ট কিছু জানেন প্লিজ জানানোর অনুরোধ রইলো।

বাংলাদেশ রিসার্চ ইন্সটিটিউটের গবেষণা বলছে, দেশে প্রতি বছর সড়ক দুর্ঘটনায় গড়ে ১২,০০০ মানুষ নিহত ও ৩৫,০০০ আহত হন। নতুন এই আইন হয়তো মানুষকে আরো বেশি সচেতন করতে বাধ্য করবে।

আমরা যদি নিজ নিজ অবস্থান থেকে সচেতন হই তাহলে হয়তো আমদের সড়ক পরিবহন আইন ২০১৯ এর সাজার সম্মুখীন হতে হবে না। নিকে সচেতন থাকি এবং অন্যকে সচেতন করে তুলি।

আশিক মাহমুদ

Published by Ashik Mahmud Bangla

Best Bikes

Honda CB Hornet 160R

Honda CB Hornet 160R

Price: 169800.00

Honda CB Hornet 160R ABS

Honda CB Hornet 160R ABS

Price: 255000.00

Honda CB Hornet 160R CBS

Honda CB Hornet 160R CBS

Price: 212000.00

View all Best Bikes

Latest Bikes

CFMoto 125NK

CFMoto 125NK

Price: 0.00

Liban Wind

Liban Wind

Price: 0.00

Liban Phoenix Plus

Liban Phoenix Plus

Price: 0.00

View all Sports Bikes

Upcoming Bikes

Liban Wind

Liban Wind

Price: 0.00

Liban Phoenix Plus

Liban Phoenix Plus

Price: 0.00

Liban Phoenix

Liban Phoenix

Price: 0.00

View all Upcoming Bikes