Shares 2
স্কুটার ভার্স মোপেড – পার্থক্য ও সামঞ্জস্য
Last updated on 31-Jul-2024 , By Ashik Mahmud Bangla
স্কুটার ভার্স মোপেড, উভয়ই আসলে স্বল্প ক্ষমতার দু-চাকার বাহন। তবে কিছু তিন চাকার ব্যাতিক্রম ও রয়েছে। উভয় বাহনই কমিউটার সেগমেন্টে পড়ে তবে তারা একটু ভিন্ন ক্যাটগরীভুক্ত। তো, আজ আমরা অলোচনায় এনেছি স্কুটার ভার্স মোপেড – পার্থক্য ও সামঞ্জস্য। চলুন আলোচনায় যাওয়া যাক।
স্কুটার ভার্স মোপেড – পার্থক্য ও সামঞ্জস্য
সাধারনভাবে পূর্ব-সময়ে স্কুটার ও মোপেড একই ক্যাটাগরীভুক্ত থাকলেও এখনকার স্কুটার মুলত: মোপেডের আধুনিক ও বর্ধিত সংস্করন। আর মোপেডগুলো এখনো মোটামুটি আগের ফর্মেশনই ধরে রেখেছে। তবে তাতে কিছু আধুনিকতার যোগও রয়েছে। আর অপর দিকে স্কুটার সময়ের সাথে আরো পরিবর্তিত হয়েছে ও নিজেই আলাদা এক ক্যাটাগরী সৃষ্টি করেছে। সুতরাং বলা যায় উভয় বাহনই বেশ কিছু পার্থক্য ও সামঞ্জস্য ধারন করে।
স্কুটার এবং মোপেড – ডিজাইন ও স্ট্রাকচার
সাধারনভাবে স্কুটার আর মোপেডের বেসিক স্ট্রাকচারের মধ্যে বেশ সাদৃশ্য লক্ষ্য করা যায়। যদিও স্কুটারের ডিজাইনে অনেক পার্থক্য চলে এসেছে। যাহোক, দুটো বাহনই অন-বোন ফ্রেমে তৈরী। আর ফ্রেমের ডিজাইন একদমই বাহুল্য বর্জিত যাতে বাড়তি কোন বডি-পার্ট প্রয়োজন না হয়।
আর এদের ইঞ্জিনটাও সাধারনভাবে সিটের নিচে ফ্রেমের সাথে সংযুক্ত। সেইসাথে ছোট ফুয়েল ট্যাংকও ছোট জায়গা নিয়ে বসানো। ফলে এসব বাহনের চালকের সামনে থাকে বেশ বড়ো একটি ফাঁকা জায়গা, যা কিনা ফুট-রেস্ট অথবা মালামাল রাখার স্থান হিসেবে ব্যবহৃত হতে পারে।
তবে এই বেসিক প্রোফাইলের বাইরে স্কুটার আর মোপেড দেখতে অনেকটাই আলাদা। মোপেড মুলত: এখনো আদি ডিজাইন ধরে রেখেছে। ঠিক বলা যায় যেন এটি একটি মোটরাইজড বাইসাকেল। আর এটা সত্যিই তাই। তবে কিছু তিন-চাকার মোপেড ও কোথাও কোথাও দেখা যায়।
যাইহোক, মোপেডের ডিজাইনটা খুব্ই সাধারন ও বাহুল্য বর্জিত। ফলে বডি-ফ্রেম ছাড়া আর বাড়তি কোন প্যানেল বা সৌন্দর্য্যকারক নেই। আর সাইকেলের সাথে সাদৃশ্য রেখে এতে রয়েছে একজোড়া সাইকেল প্যাডেল। যা কিনা তেল অথবা ইঞ্জিনের সাপোর্ট ছাড়া মোপেডটিকে সাইকেলের মতো চালাতে সাহায্য করবে।
অপর দিকে স্কুটার দুই চাকারই হয়ে থাকে যদিও তা মোপেডেরই আধুনিক সংস্করন। আর স্কুটারে সাইকেল প্যাডেলটি পুরোপুরি বাদ দেয়া হয়েছে। আর স্কুটার আধুনিক ডিজাইন সহ বেশ বড়সড় অবয়ব ধারন করে। স্কুটারে রয়েছে সমস্ত স্ট্রিট-লিগ্যাল ফিচার, বিস্তৃত বডি-প্যানেল, স্টোরেজ কম্পার্টমেন্ট, ও আধুনিক গ্যাজেট সমূহ। সব মিলিয়ে বলা যায় স্কুটার আকারে বেশ বড়সড় আর আধুনিক ফিচার সমৃদ্ধ আর কিছুটা বিলাসবহুল কমিউটার।
স্কুটার ও মোপেড – ইঞ্জিন ও সক্ষমতা
স্কুটার আর মোপেড দুটোই মুলত: সব দিক দিয়ে কমিউটার যা আমাদের প্রাত্যহিক চলাচলের জনেই ডিজাইন করা। আর তাই দুটো বাহনেই সাধারন চলাচলের উপযোগী অল্প ক্ষমতার ইঞ্জিন ব্যবহার করা হয়ে। বিশ্বব্যাপী মোপেডে মুলত: ৫০সিসি ক্ষমতার ইঞ্জিন ব্যবহার করা হয়। তবে কিছু মোপেডে ১০০সিসি ইঞ্জিনও ব্যবহার করা হয়ে থাকে। আর এইসব ইঞ্জিন খুব সহজেই চালানো যায়; কেননা তাদের কোন ম্যানুয়েল গিয়ার ও ক্লাচ থাকেনা। আর অবধারিতভাবেই এসব ইঞ্জিন অত্যন্ত জ্বালানী সাশ্রয়ী।
আর অপর দিকে স্কুটারগুলিতে ৫০-৩০০সিসি বা আরো বেশি ক্ষমতার বিভিন্ন ধরনের ইঞ্জিন ব্যবহার করা হয়ে থাকে। তাই অটোমেটিক, ম্যানুয়্যাল সব ধরনের ইঞ্জিনই স্কুটারে রয়েছে। আর সেইসাথে আধুনিক স্কুটারে রয়েছে ইলেকট্রিক স্টার্ট, আধুনিক সাসপেনশন, এবিএস, ট্রাকশন কন্ট্রোল, ক্রূজ কন্ট্রোল, ইত্যাদি। সুতরাং আধুনিক স্কুটারগুলো মোপেড থেকে অনেক বেশি শক্তিশালি ও ভিন্ন বৈশিষ্ট্যপূর্ণ।
স্কুটার ও মোপেড – উপযোগীতা ও বৈশিষ্ট্য সমূহ
স্কুটার আর কমিউটার দুটোই সাধারনভাবে কমিউটার; আর তাদের ডিজাইনই করা হয়েছে প্রাত্যহিক চলাচলের সুবিধার জন্যে। তবে এই দুটোর মধ্যে মোপেড তুলনামুলকভাবে বেশি অর্থ সাশ্রয়ী, যা প্রাত্যহিক স্বল্প দুরত্বে চলাচলের জন্যে খুবই উপযোগী। আর সেই সাথে মোপেড জ্বালানী সাশ্রয়ী, মালামাল বহন সক্ষম ও রক্ষনাবেক্ষন অত্যন্ত সহজ।
আর স্কুটার কমিউটার হলেও এর উপযোগীতার পরিসর অনেক বেশি। স্কুটারও বেশ জ্বালানী সাশ্রয়ী, মালামাল বহন সক্ষম ও সহজ রক্ষনাবেক্ষন বৈশিষ্টসম্পন্ন তবে তা অনেক বেশি পারফর্মেন্স ফোকাসড ও অনেকটাই বিলাসী ধরনের। সুতরাং স্কুটার অনেক বেশি ফিচার ও ক্ষমতাসম্পন্ন, যা কিনা অনেকটাই ব্যবহারকারীর আভিজাত্য প্রকাশ করে।
স্কুটার ভার্স মোপেড – টার্গেট কাষ্টমার
স্কুটার ও মোপেড দুটো আলাদা ধরনের বাহন বিধায় তাদের টার্গেট কাষ্টমারেও কিন্তু রয়েছে অনেক ভিন্নতা। মোপেড মুলত: অত্যন্ত অর্থ সাশ্রয়ী কমিউটার। এর দাম সবচেয়ে কম, চলানো খরচ সাশ্রয়ী, আর রক্ষনাবেক্ষনও অনেক কম। আর এর উপযোগীতার মাত্রা খুবই ফোকাস্ড বিধায় এর ক্রেতা খুবই নির্দিষ্ট। অর্থাৎ যারা কেবলমাত্র সাধারন চলাচলের জন্য সাশ্রয়ী ও স্বল্পমুল্যের বাহন চান তাদের জন্যে মোপেড।
আর অন্যদিকে স্কুটারে রয়েছে বিস্তৃত বৈশিষ্ট্যের সমাহার। আর তাই এর ক্রেতার পরিসর ও অনেক বড়। একজন ক্রেতা কম ফিচারের খুবই মুল্য সাশ্রয়ী স্কুটার কিনতে পারেন। অথবা চাইলে শক্তিশালী বিলাসবহুল কোন মডেল ও বেছে নিতে পারেন। সুতরাং গ্রাহক তার বাজেট, রুচি ও ব্যাক্তিত্বের সাথে মিলিয়ে তার পছন্দের স্কুটারটি কিনতে পারেন। সে হিসেবে অবশ্যই স্কুটারের গ্রাহক পারিসর অনেক বড় ও বৈশিষ্ট্যপূর্ণ।
তো বন্ধুরা, এই ছিল আমাদের আজকের স্কুটার ভার্স মোপেড – পার্থক্য ও সামঞ্জস্য আলোচনা। আশা করি আমাদের আলোচনার সারকথা আপনাদের ভালো লেগেছে। তো আমাদের সাথে থাকার জন্যে আপনাদের জানাই অনেক ধন্যবাদ। শ্যীঘ্রই আবার আমরা নতুন অলোচনা নিয়ে ফিরবো। ভালো থাকবেন।
T
Published by Ashik Mahmud Bangla