Shares 2

রাতে বাইক রাইডিং এর কিছু উপকারী টিপস........

Last updated on 07-Jul-2024 , By Shuvo Bangla

রাতে বাইক রাইডিং বেশীরভাগ সময়েই বিপদজনক হয়ে থাকে এবং এটা যদি আপনি এনজয় করেও থাকেন ও আপনার কাছে সব সেফটি টুলস থেকেও থাকে তারপরও সেখানে বিপদের ঝুকি থেকে যায় । বেশীরভাগ রাইডাররাই রাতের বেলায় রাইডিং বাদ দিয়ে থাকেন । এর কারণ হল লো লাইট কন্ডিশন , বিভিন্ন রাস্তার ভাঙাচোরা যেগুলো রাতের বেলায় ভাল দেখা যায় না , অন্যান্য অবজেক্ট যেগুলো রাতে খুব ভাল দেখা না যাবার কারণে এক্সিডেন্টের সম্ভাবনা থেকে যায় ।

রাতে বাইক রাইডিং এর কিছু উপকারী টিপস

রাতে বাইক রাইডিং টিপস

রাতের বেলায় রাইডিং এর সময় বাইকের কোন সমস্যা হলে বা আপনি কোন সমস্যায় পড়লে সেখানেও আপনার পরিত্রাণ পাওয়াটা অনেক কঠিন হয়ে যায় । এতসব অসুবিধার পরেও অনেকে রাতের বেলায় রাইডিং এর পরামর্শ দেন । কারণ , রাতে আবহাওয়া অনেক ভাল থাকে , রাস্তায় জ্যাম থাকে না , ইন্জিন কম গরম হয় , কম সময়ে বেশী পথ যাওয়া যায় প্রভৃতি ।

এখন , রাতে রাইডিংটা হল রাইডারের জাস্ট পারসোনাল একটা মতামত । এখানে কেউ কাউকে জোর করতে পারে না । এখন , রাতে কীভাবে সেফলি বাইক রাইড করা যায় সে বিষয়ে আমরা আজ কিছূ জানব ।

অন্ধকারের মধ্যে ভাল ভিউ পাওয়া : 

রাতে রাইডিং এর সবথেকে গুরুত্বপূর্ণ বিষয় হল রাস্তাকে ভালভাবে দেখা , যার জন্য আপনাকে রাস্তাকে ভালভাবে আলোকিত করতে হবে । এখন আমরা ধরে নিলাম , আপনার চোখের দৃষ্টিশক্তি যথেষ্ঠ ভাল , তাহলে এখন বাকী কাজ হল মোটরবাইকের হেডলাইটের যেটা রাস্তাকে আলোকিত করার কাজটা করে থাকে । বেশীরভাগ মডার্ণ ট্যুরিং বাইকের হেডলাইট রাস্তাকে আলোকিত করার জন্য বেশ ভালভাবে সেটআপ করাই থাকে । এই বাইকগুলোর হেডলাইট খুবই পাওয়ারফুল থাকে এবং রাস্তার একটা খুবই ভাল ভিউ পাওয়া যায় ।

Also Read: ১০ টা রাইডিং টিপস যেগুলো আপনি হয়ত জানেন না

কিন্তু , আমরা যদি স্পোর্টস বাইক বা যে সব লো কনফিগারেশন এর বাইক রাস্তায় চলে এদের কথা চিন্তা করি , তাহলে আমাকে বলতে হবে যে এই বাইকগুলোর হেডলাইট রাতে ভ্রমণের জন্য মোটেও পারফেক্ট নয় । এখন এই বাইক গুলোর ক্ষেত্রে আমরা বাইকের হেডলাইট আপগ্রেড করে বড় লাইটিং জেনারেটর দ্বারা আরও বড় বা উজ্জ্বল হেডলাইট বসিয়ে নিতে পারি । এটা বাইক কেনার পরও সেট আপ করে নেওয়া যায় । কিন্তু এই আপগ্রেডিং এর সময় খেয়াল রাখতে হবে যেন কোনমতেই কোন ইলেকট্রিক ত্রুটির কারণে হেডরলাইট এর ইউনিট বা তার পুড়ে না যায় বা কোন ক্ষতি না হয় ।

Headlight Setting

 এখন আরেকটি চিন্তার বিষয় হল আমরা সব সময়ই হেডলাইটকে রাস্তা আলোকিত করার জন্য বিবেচনা করি । কিন্তু , এটাও মনে রাখা দরকার , হেডলাইটের আলো “লো বিম” যেটা একটা প্রশস্ত ও অল্প এলাকা জুড়ে আলোকিত করে এটা আপনার অপজিট থেকে আসা রাইডারদের চোখে তেমন লাগে না । কিন্তু , “হাই বিম” একটা চিকন এলাকা ও অনেক দূরের বস্তু দেখার জন্য ব্যাবহৃত হয় যেটা অনেক সময় আপনার দিকে আসা রাইডারদেরকে অন্ধ করে একটা বিপদ ঘটাতে পারে ।

তাই , এই ফাংশনটার সঠিক ইউজ সবারই রাইডিং এর সময় করা উচিৎ । হাই বিম অনেক সময় হেডলাইটের ইউনিট কে অতিরিক্ত গরমও করে দেয় । তাই , যখন যে ফাংশনটার প্রয়োজন , তখন সেটা ইউজ করাই সবথেকে ভাল ।

অন্যদের কাছে ভিজিবল হওয়া :

ধরে নিলাম আপনার লাইট সেটিংস শেষ এবং আপনার লাইট সেটিং নাইট টাইম রাইডিং এর জন্য পারফেক্ট । এরপরও একটা বিষয় থেকে যায় যেটা হল অন্যান্য রাইডারদের কাছে নিজেকে ভিজিবল করা । অন্যান্য যানের চালকরা যাতে আপনাকে দেখতে পেয়ে উপযুক্ত ব্যাবস্থা নেয় সেটাও আপনাকে মাথায় রাখতে হবে । এর জন্য সাধারণত বাইকে LED লাইট , auxiliary লাইট , নিয়ন স্টিক প্রভৃতি ইউজ করা হয় । সবথেকে ভাল হয় যদি অন্যান্য চারকরা সরাসরি আপনাকে দেখতে পায় সেটাই ।

হয়ত আপনি চাইবেন রাতের বেলায় একটু ডার্ক কালারের ডেস আপ করতে , কিন্তু সেটা রোডে আপনার জন্য বিপদ ডেকে আনতে পারে । সবথেকে ভাল হয় auxiliary লাইট ইউজ করা যেটা অন্যান্য চালকদের কাছে আপনাকে মোটরসাকেলিস্ট হিসেবে সো করবে এবং এই লাইটটি সবার চোখে পড়ে দ্রুত , ফলে অন্যান্য চালকরা আপনার উপস্থিতি বুঝতে পেরে তাদের যানবাহন যথেষ্ঠ পরিমাণে স্লো করতে পারে । এটা আপনি একটু কম খরচের মধ্যে করতে চাইলে আপনি বিভিন্ন লাইট রিফ্লেক্টিভ টেপ ইউজ করতে পারেন ।

এই টেপ লাগানোর জন্য একটা নির্দিষ্ট কালার কোডিং রয়েছে যেটা বাইকে ইউজ করা হয় । যেমন যেছনের দিকে লাল , সামনে সাদা , সাইডে অম্ব্যার । আপনি যদি এগুলো মিক্স করে ইউজ করতে চান তাহলে সেটা মোটেও ভাল হবে না । কারণ , এই মিক্স আপের ফলে অন্যান্য রা অনেক সময় বুঝতে পারে না আপনার বাইকটি স্থির না চলমান ।

শেষ প্রস্তুতি : 

এবার আসি একদম শেষের দিকের কথায় । নাইট টাইম রাইডিং এর সময় আপনার উচিৎ দিনের মতই প্রিপারেশন নেওয়া । সাথে একটা সুন্দর হেলমেট যার গ্লাসটা খুবই ক্লিয়ার হতে হবে । গ্লাস পরিষ্কার করার জন্য আপনি আপনার কাছে সবসময়ই একটা ভাল কাপড় জাতীয় কিছু রাখতে পারেন । আপনি এজন্য মাইক্রো ফাইবার এর কাপড় নিতে পারেন । অথবা আপনি এটার জন্য সাধারণ পানিও ইউজ করতে পারেন । উপরের সবকিছু ঠিকঠাক থাকার পরও রাস্তার কিছু অংশ আপনি দেখতে নাও পেতে পারেন , যেটা হতে পারে একটা গর্ত বা স্পীড ব্রেকার অথবা কোন মোড়ে হয়তবা কোন খারাপ রাস্তা বা কোন জীব জন্তু থাকতে পারে । এসবের দিকেও আপনাকে ভালভাবে নজর দিতে হবে ।

Night Riding

সবসময় মনে রাখবেন , কিছু কিছু ড্রাইভার আছে যারা দিনের বেলাতেই রেকলেস ড্রাইভিং করে থাকে , আর রাতের বেলায় তারা আরও ভয়ঙ্কর হয়ে উঠতে পারে আপনার জন্য । তাই , নাইট রাইডিং এর সময় সবসময় অন্যান্য যানবাহন থেকে নির্দিষ্ট দুরত্ব বজায় রেখে বাইক রাইড করাটাই সেফ । তারপর আপনি যদি রাইডিং এর কোন পর্যায়ে ক্লান্ত হয়ে যান , তাহলে বেশী রিস্ক না নিয়ে একটু বিশ্রাম নেওয়াটাই সেফ হবে । কারণ , ক্লান্ত অবস্থায় আপনি বাইকটি নিজের মত করে রাইড করতে পারবেন না ।

Also Read: বাংলাদেশের সেরা পাচটি 150cc এয়ার কুলড বাইক

শেষে এই টাই বলব যে , সম্পূর্ণ ভাল শারীরিক ও মানসিক ফিটনেস থাকলে এবং উপরের বিষয়গুলো সব যতটুকু পারা যায় ঠিকঠাক থাকলে নাইট রাইডিং ডে টাইম রাইডিং এর থেকে অনেক মজার হতে পারে । আর নাইট রাইডিং এর সবথেকে ২ টি বড় সুবিধা হল

১. গরমকালে একটা সুন্দর ঠান্ডা ও অনুকূল আবহাওয়া পাওয়া যায় ।

২. রোড অনেক ফাকা থাকে ফলে রাইডিংটা আরও মজার হযে থাকে।

** তবে রাতে বাংলাদেশের রাস্তার নিরাপত্তা অনেক বড় একটি বিষয়। আমরা সবসময় বলে থাকি যদি রাতে বাইক চালানো এড়ানো সম্ভব হয় তাহলে অবশ্যই তা এড়িয়ে চলুন। **

তাই , রাতে বাইক রাইডিং এর ক্ষেত্রে কোনকিছু ভাগ্যেরে উপর ছেড়ে না দিয়ে নিজেকে ও বাইককে যথেষ্ঠ পরিমাণে নাইট রাইডিং এর উপযুক্ত করে তুলুন ও নিজের ফিটনেস বুঝে বেড়িয়ে পড়ুন ।

Published by Shuvo Bangla