Shares 2

বাইক নিয়ে ট্যুর দি হিলট্র্যাক

Last updated on 04-Jul-2024 , By Shuvo Bangla

অনেক দিন যাবত কোথাও যাওয়া হচ্ছে না শরীরটা মেজমেজ করছিলো, হঠাৎ একদিন সবুজ ভাই ফোন করলেন এবং বললেন হিলট্র্যাকে বাইক নিয়ে ট্যুর দিব তোমাকেও যেতে হবে, শুনেই মনটা লাফাতে শুরু করে আবার চিন্তাও লাগে বাসার কথাও ভাবতে লাগলাম যাব কি না?

বাইক নিয়ে ট্যুর দি হিলট্র্যাক

 অবশেষে সকল জল্পনা কল্পনা শেষ করার পর আমরা সবাই মিলে একসাথে বসে দিন তারিখ ঠিক করলাম এবং কোথায় কোথায় যাব সব ছক তৈরি করলাম। আমাদের হোসেন ভাই পারিবারিক কাজের জন্য আগের দিন আমাদের জানিয়ে দিলেন উনি যেতে পারবেন না, মন খারাপ হয়ে গেল। অবশেষে আমরা ৮ তারিখ সন্ধা ৭টায় ঢাকা হতে রওনা দিলাম ৫ টা বাইকসহ ৭ জন এবং কুমিল্লায় আমাদের সাথে যোগ দিবে বড়লেখা রাইডার্স এর সাগর ভাই, সাব্বির ভাই, মাসুম ভাই সবাই মিলে কুমিল্লায় রাতের খাবার শেষ করে রওনা হলাম বাড়ইহাটের উদ্দেশ্যে কারন সেখানে আমাদের জন্য ২ ঘন্টা ধরে অপেহ্মা করতেছেন পারভেজ ভাই।

ভাইকে সাথে নিয়ে চা বিড়ি খেয়ে ৯টা বাইক এবার আমরা রওনা দিলাম সাজেক এর উদ্দেশ্যে সারারাত রাইড করার পর ৯ তারিখ ভোরে আমরা দীঘিনালা আর্মি গেট এ পৌছাই তারপর নাস্তা করে ১১.৩০ মিনিট এ আর্মি প্রটোকল নিয়ে সাজেক ঢুকলাম, সাজেক যাওয়ার পর মনে হচ্ছে আমরা প্রকৃতির ছবির ভিতর প্রবেশ করেছি, আর সাজেকের ভয়ংকর আকাবাকা পথ সবারই মন কেড়ে নিয়েছে।

না গেলে আপনি বুঝতে পারবেন না জায়গাটা কত সুন্দর, তারপর সবাই সিদ্ধান্ত নিলাম প্রটোকল ছাড়া বের হব এবং তাই করলাম ৩ টায় আমরা বের হলাম। বের হয়ে আবার দীঘিনালা হয়ে খাগড়াছড়ি শহরে এসে পৌছালাম এবং রাতের খাবার শেষ করলাম। তার মধ্যে আবার আমাদের দুইটা বাইক অফিসের কারনে ঢাকা ব্যাক করবে।

রাত তখন ৯টা, ২টা বাইককে বিদায় জানিয়ে আমরা রওনা হলাম রাঙ্গামাটির উদ্দেশ্যে, নির্জন এলাকা কোন গাড়ী নেই, মানুষের চলাচলও নেই সবার  মধ্যে ভয় ভয় কাজ করতেছিল তার ওপর এটা নাকি পুরাটাই শান্তিবাহীনীদের এলাকা আমরা তা জানতাম না, আমাদের  জানিয়েছেন রাঙ্গামাটি আর্মি কমান্ডার মেজর শাহীন ভাই।

উনি খুব ভাল মানুষ এবং চরম বাইক লাভার উনি নাকি বাইকে বসলে  স্পিড থাকে ১০০+।  উনার সাথে প্রায় একঘন্টা আড্ডা দিয়ে ১২ টায় আমরা রাঙ্গামাটি হোটেলে পৌছালাম। সেখানে আমাদের জন্য  আগেই রুম বুক করে রেখেছিলেন সাগর ভাই এর বন্ধু (নাম মনে নাই) উনি খুবই ভাল একজন মানুষ। সবাই রাতে তারাতারি ঘুমিয়ে পড়লাম এবং ১০ তারিখ সকালে আমরা রওনা হলাম ঝুলন্ত ব্রিজ দেখতে। সেখানে ছবি তুলে নাস্তা করে বের হলাম  কাপ্তাইয়ের উদ্দেশ্যে।

বের হয়েই আসামপট্টি দেখা হল আহসান  হাবিব ভাই এর সাথে ওনি এখানে আমাদের জন্য সকাল থেকে অপেহ্মা করতেছিলেন, সেখান থেকে হাবিব ভাই আমাদের তার শহর ঘুরিয়ে দেখালেন এবং আমাদের দুপুরের খাবার খাওয়ার জন্য জোড়াজোড়ি শুরু করলেন (পুরাই পাগল এই লোকটা :-D) যদিও আমরা খেয়ে এসেছি তাই শুধু কফি খেয়ে ওনাকে সাথে নিয়ে ফেরি পার হয়ে রওনা দিলাম বান্দরবান এর দিক।

আহসান হাবিব ভাই এর মত পাগল আর ভাল লোক আমি খুব কমই দেখেছি উনার  কথা যতই বলি কম হবে, ভাই সারা জীবন মনে থাকবে আপনার কথা, আহসান ভাই আমাদের বান্দরবান শহরে সিফাত ভাই এর কাছে পৌছে দিয়ে ওনি আবার কাপ্তাই ব্যাক করেছেন। বান্দরবান  শহরে পৌছেই সিফাত ভাই এর সাথে দেখা এবং,দেখা হয়ে গেল জনি ভাই এর সাথে তাদের সাথে কথা বলেই সিফাত ভাইয়ের সাথে মেঘলায়। যদিও সেখানে দেখার মত কিছুই না সেখান থেকে  বের হয়ে দুপুরের খাবার শেষ করে গেলাম নিলাচলে। কি ভয়ানক রাস্তা,কাদা,জ্যাম ঠেলে ভিতরে ডুকতেই চলে আসলেন শিমুল  ভাই, যখন আমরা হোটেল পাচ্ছিলাম না ঠিক তখনই ম্যাজিক এর মত দুই মিনিটে আমাদের জন্য হোটেল বুক করলেন শিমুল ভাই।

সবাই মিলে সেখানে কিছুহ্মন সময় কাটিয়ে হোটেলে উঠলাম ফ্রেস হলাম তখনই আমাদের সাথে দেখা হয়ে গেল রোমেল ভাই এর সাথে যিনি আমাকে অনেক হেল্প করেছেন এই ট্যুরের ব্যাপারে। সবাই মিলে একসাথে রাতের খাবার শেষ করে করলাম সাথে ছিলেন রোমেল ভাই,শিমুল ভাই,জনি ভাই। বান্দরবানের ভাইয়েরা যে এত ভাল তা কখনোই বুঝতাম না যদি তাদের সাথে দেখা না হত। তারপর তাদের বিদায় জানিয়ে হোটেলে গিয়ে ঘুমিয়ে পড়লাম, ১১ তারিখ সকালে রোমেল ভাই ও সিফাত ভাইকে বিদায় জানিয়ে রওনা দিলাম চিম্বুক এর দিকে সেখানে গিয়ে মজার খিচুরি খেয়ে আবার রওনা দিলাম নিলগিরির উদ্দেশ্যে।

নিলগিরি পৌছে বেশ কিছুহ্মন সময় কাটিয়ে ছবি তুলে আমরা থান্চি আলিকদম এর দিকে রওনা হলাম, এই রাস্তাটা বাংলাদেশের সবচেয়ে উচু এবং ভয়ংকর রাস্তা আর একটা কথা আমরা কিন্তু বান্দরবান থেকে রওনা হওয়ার পর থেকে বৃষ্টি শুরু হয় যা ছিল আরও বেশি ভয়ানক। যখন থান্চির পাহাড়ে ওঠি দেখি ওপর থেকে পানি নামতেছে এবং সাথে কাদা ও পাথর, সবার বুকের মধ্যে ভয় সৃষ্টি হয়ে গলা শুকিয়ে গেল তার ওপর আমাদের বুলেট ফরহাদ ভাই আরও বেশি ভয় পেয়ে গেল।

তার টিভিএস মেট্রো১০০ বাইক নিয়ে ওনাকে সাহস ঝুগিয়েছেন সবুজ ভাই, যাই হক সব প্রতিকুল পরিবেশ পার করে আমরা যখন ডিম পাহাড়ে তাকিয়ে দেখি জমাট বাধা সাদা মেঘগুলো এভারেস্টের চুড়ার মত একটু দুরেই দাড়িয়ে আছে। ডিম পাহাড়ের রাস্তার কাছে সাজেক এর রাস্তা ডাল ভাত। এমন কিছু কিছু বাক ছিল যে বাইক ২য় গিয়ারে দিতেই পারি নি তারপর সেখান থেকে আলিকদম ০পয়েন্ট এ এসে হালকা নাস্তার ব্রেক দিয়ে এক টানে কক্সবাজার ডুকলাম।

হোটেল ঠিক করার পর Tour de spirit এর লুৎফুল্লাহ আল মারুফ ভাইয়ের সাথে দেখা হয়ে গেল যদিও ওনাকে ১০ মিনিট আগে কল করেছিলাম, এই ভাই পাগলের মত আমাদের ১০ জনের জন্য খাবার নিয়ে আসছিলেন, ওনার অতিথীপনায় আমরা মুগ্ধ। তারপর আমরা সবাই ঘুমিয়ে পড়লাম। ১২ তারিখ সকালে ঘুম থেকে ওঠে Sagar ভাই বলতেছেন ওনারা আজকে বেক করবেন না তাই আমি, Parves ভাই, Sabuz ভাই, Forhad ভাই তারাতারি নাস্তা করে বীচে চলে গেলাম সেখানে গোসল করে হোটেলে এসে সব কিছু গুছিয়ে সাগর ভাইদের বিদায় জানিয়ে রওনা হলাম।

সাগর ভাই আপনাদের ছেড়ে আসতে খুব খারাপ লাগছে, ইনশাআল্লাহ আবার দেখা হবে। হোটেল থেকে আমাদের এগিয়ে দিতে এসেছেন মারুফ ভাই, যখন সবুজ ভাই মবিল চেন্জ করাবেন তখনই আমাদের সাথে দেখা হল Eaysir mahmud ভাই এর সাথে এই দুই ভাইকে কাছে পেয়ে কক্সবাজার ছেড়ে আসতে মন চাচ্ছিল না, তারপর তাদের বিদায় জানিয়ে রওনা দিলাম চিটাগাং এর দিকে সেখানে গিয়ে দেখি চিটাগাং বাইকার্স এর Siraj Moni ভাই Daulat DK ভাই Ahsan Habib ভাই আমাদের জন্য অপেহ্মা করতেছিল।

ওনাদের সাথে জমিয়ে আড্ডা দিলাম ও রাতের খাবার খেলাম, ওনারা খুবই আন্তরিক ও ভাল মানুষ, তারপর ওনারা আমাদের ভাটিয়ারী পর্যন্ত পৌছে দিলেন এবং পারভেজ ভাই আমাদের বিদায় জানালেন। তখন আমাদের খুব কষ্ট লাগতেছি কারন পারভেস ভাই যদি আমাদের সাথে না থাকত তাহলে এত কমসময়ে এত সুন্দর ট্যুর দিতে পারতাম না, রাত ৯টায় সবুজ ভাই, ফরহাদ ভাই ও আমি কুমিল্লার দিকে রওনা হয়ে রাত ১২ টায় ছন্দু হোটেল পৌছাইলাম এবং খাবার খেয়ে ১ ঘন্টা ব্রেক দিয়ে ভোর ৪.৩০ মিনিটে বাসায়,পৌছালাম।

ধন্যবাদ জানাই সেই সকল ভাইদের যারা ট্যুরটাকে সফল করার জন্য সহযোগিতা করেছেন। এই ট্যুরে আমাদের বাইক ছিল

সবুজ ভাই এর ট্রিগার১৫০,

পারভেজ ভাই এর এএস১৫০,

আমার পালস্র১৩৫,

ফরহাদ ভাই এর টিবিএস মেট্র১০০,

সাগর ভাই এর পালসার১৫০,

সাব্বির ভাই এর আর১৫,

রিফাত ভাই এর পালসার১৫০।

এই ট্যুরে একটা জিনিস খেয়াল করলাম ট্যুর দিতে হলে হাই সিসি বাইক এর দরকার নাই দরকার ইচ্ছাশক্তি ও শক্ত মনোবল যা আমাদের ফরহাদ ভাই দেখিয়েছেন।

সবাইকে ধন্যবাদ এত বড় লেখাটা কষ্ট করে পড়ার জন্য, কোন ভুল ত্রুটি হলে হ্মমা সুন্দর দৃষ্টিতে দেখবেন।

Alamgir GBz Gazipur Bikerz

Published by Shuvo Bangla

Best Bikes

Honda CB Hornet 160R

Honda CB Hornet 160R

Price: 169800.00

Honda CB Hornet 160R ABS

Honda CB Hornet 160R ABS

Price: 255000.00

Honda CB Hornet 160R CBS

Honda CB Hornet 160R CBS

Price: 212000.00

View all Best Bikes

Latest Bikes

CFMoto 125NK

CFMoto 125NK

Price: 0.00

Liban Wind

Liban Wind

Price: 0.00

Liban Phoenix Plus

Liban Phoenix Plus

Price: 0.00

View all Sports Bikes

Upcoming Bikes

Liban Wind

Liban Wind

Price: 0.00

Liban Phoenix Plus

Liban Phoenix Plus

Price: 0.00

Liban Phoenix

Liban Phoenix

Price: 0.00

View all Upcoming Bikes