Shares 2

প্রো রাইডারজের কুয়াকাটা ট্যুর

Last updated on 06-Jul-2024 , By Shuvo Bangla

খুলনার ভ্রমণ পিপাসু একটি মোটরবাইক গ্রুপ প্রো রাইডারজ। বর্তমানে তাদের সদস্য তিন জন হলেও সদস্য বাড়ার ব্যাপারে আশাবাদী তারা। কয়েক সপ্তাহ আগে তীব্র দাবদাহে সারাদেশ যখন অতিষ্ঠ, সেই সময় তারা খুলনা থেকে কুয়াকাটা ভ্রমণ করে। সারাদিনব্যাপী এই ভ্রমণে তাদেরকে বাইকে ৫০০ কিলোমিটার পথ পাড়ি দিতে হয়েছে। প্রো রাইডারজের খুলনা টু কুয়াকাটা ভ্রমণ নিয়ে লিখেছেন মো. সাকিব

প্রো রাইডারজের কুয়াকাটা ট্যুর

হ্যা, এই তীব্র গরমে প্রতিদিনকার একঘেঁয়ে জীবনে বিরক্ত হয়ে পড়েছিলাম আমরা। সেজন্যই আমরা, প্রো রাইডারজ দিনব্যাপী একটি ভ্রমণের পরিকল্পনা করি। আর যেহেতু আমরা একেক জন একেক পেশায় নিয়োজিত, তাই ভ্রমণের জন্য আমরা ছুটির দিনকেই বেছে নিই।

গত ৭ মে, শনিবার আমরা কুয়াকাটা ভ্রমণের দিন নির্ধারণ করি। তার আগের রাতে আমরা তিন জন মানে মুন্না, সোহেল ও আমি সাকিব একসঙ্গে বসে সিদ্ধান্ত নিই সাগরকন্যা কুয়াকাটা যাবো। দিনব্যাপী এই ভ্রমণে আমাদের খুলনা থেকে কুয়াকাটা যেতে আসতে মোট ৫০০ কিমি পথ পাড়ি দিতে হয় এবং এতে আমাদের ৯ ঘণ্টা সময় লেগেছিলো। আমার পালসার এএস ১৫০, মুন্নার হাঙ্ক এবং সোহেলের অ্যাপাচি আরটিআর নিয়ে আমরা বেড়িয়ে পড়ি।

কুয়াকাটা যাত্রার সূচনা

শনিবার ভোর সাড়ে ৪টায় মুন্নার ফোন পেয়ে যাত্রা শুরু হয় আমাদের। ঘুম থেকে উঠেই ফজরের নামাজ পড়ে নিই। এরপর গোসল সেরে আমার ছোট্ট হ্যাভারস্যাকে কিছু কাপড় নিয়েছিলাম। সব প্রস্তুতি সম্পন্ন করে রূপসা ব্রিজের কাছে আমরা চা-নাস্তা সেরে যাত্রা শুরু করি। শুরুতেই আমরা আলোচনা করে ঠিক করে নিয়েছিলাম, আমাদের গড় স্পিড ৮০ কিমি/ঘণ্টার চেয়ে কম হওয়া চলবে না।

যেহেতু আমাদেরকে ২৫১*২ = ৫০২ কিমি পথ পাড়ি দিতে হবে সেজন্য ধীর গতিতে চললে পোষাবে না। তাছাড়া আমরা ফেরিও এড়িয়ে চলার সিদ্ধান্ত নিয়েছিলাম। তাই আমরা ঠিক করি রূপসা ব্রিজ-কাটাখালী-গোপালগঞ্জ-কাঠি বাজার-গৌরনদী, বরিশাল-পটুয়াখালী শহর-বরগুনা-লেবুখালি ফেরি-খেপুপাড়া-কুয়াকাটা এই পথে ভ্রমণ করবো।

সকাল ৭টার সময় আমরা গৌরনদী, বরিশালে পৌঁছে নাস্তা করি। নাস্তায় বরিশালের ঐতিহ্যবাহী মিষ্টি ও রুটি খাই, যা সত্যিই অসাধারণ ছিলো। নাস্তা পর্ব শেষ করে আমরা বরিশাল ত্যাগ করি এবং পথে বরিশাল বিশ্ববিদ্যালয় ও পটুয়াখালী বিশ্ববিদ্যালয় ক্যাম্পাস দেখে যাই। কিন্তু গোপালগঞ্জ, পটুয়াখালী, বরিশাল হাইওয়ে জুড়ে প্রচুর প্লাটিনার ছড়াছড়ি চোখে পড়ে, যেগুলো ওই অঞ্চলে ভাড়ায় চালানো হয় এবং এটা খুবই বিরক্তিকর মনে হচ্ছিলো। এদের কারণে আমাদের ৮৫-৯০ কিমি/ঘণ্টা গতিবেগে বিঘ্ন ঘটছিলো।

আমরা আরো একটা জিনিস লক্ষ করেছি যে, কুয়াকাটা-ঢাকা, কুয়াকাটা-বরিশাল রুটের অধিকাংশ বাস ড্রাইভারই খ্যাপাটে ও নির্বোধ প্রকৃতির। এরা বারবারই আমাদেরকে চাপিয়ে দিচ্ছিলো। অবশ্য আমরাও যে সবসময় সব নিয়ম মেনে চলেছি তা নয়; সুযোগ পেলেই ১১০+ স্পিডও তুলেছিলাম।

খুলনা থেকে গোপালগঞ্জ পর্যন্ত রাস্তা খুবই মসৃণ, একেবারে মাখন বরাবর! কিন্তু বরিশাল থেকে পটুয়াখালী সড়ক খুবই সরু ও ভাঙাচোড়া। যদিও আমরা বেশ কয়েকটি সুন্দর কর্নারিং করেছিলাম। কিন্তু মনে রাখবেন, এই পথ আপনার পরিচিত নয়। নিজের পথে যতোটা সাবলীলভাবে চলা যায়, অপরিচিত রাস্তায় সেভাবে চলা সম্ভব না।

যাহোক সকাল ১১টা ২৩ মিনিটে আমরা তিন জন নিরাপদেই ২৫১ কিমি পাড়ি দিয়ে কুয়াকাটা সমুদ্র সৈকতে পৌঁছাই। সেখানে আমাদের সঙ্গে দেখা হয়ে যায় খুলনার প্রখ্যাত স্টান্ট গ্রুপ ফেরোসিয়াস ফ্ল্যাশ-এর ফাহিম ভাই ও তার দলবলের। তারাও আমাদের মতোই হঠাৎ করে কুয়াকাটা সমুদ্র সৈকত ভ্রমণে এসেছেন।

যাহোক, এরপর আর অপেক্ষা করা যায় না। পোশাক-আষাক চেঞ্জ করে নেমে পড়লাম লোনা জলে, ধুয়ে ফেললাম সকল ক্লান্তি। সোহেল ভাইতো আনন্দের সঙ্গে সাগরে জেট স্কি করতে নেমে পড়লেন। আর মুন্না ব্যস্ত হয়ে পড়লো খাবার ও শামুকের গহনা কিনতে।

এরপর দুপুর ১টা ২০ মিনিটে আমরা স্থানীয় মসজিদে নামাজ পড়ে নিলাম। কিন্তু এতোক্ষণে সামুদ্রিক খাবার খাওয়ার জন্য আমাদের পেটে ছুচোর দৌড় শুরু হয়ে গেছে! চলে গেলাম রাজধানী হোটেলে দুপুরের খাবার খেতে। সেখানকার ইলিশ মাছের স্বাদ এখনো আমার মুখে লেগে রয়েছে। মুন্না আর সোহেল ভাই অবশ্য আরো বেশ কয়েক ধরনের মাছ চেখে দেখেছিলেন।

তবে বলে রাখি, এসব হোটেলের বিল কিন্তু ততোটা সুবিধার হয় না, তবে এই হোটেলেরটা খারাপ না। খাওয়া শেষে আমরা রাখাইন পল্লী ও লেবুতলা সৈকতে দেখতে যাই। সেখানে গিয়ে আকাশে মেঘ দেখে কিছুটা ভীতি কাজ করছিলো আমাদের মাঝে। সেজন্য ৪টার সময়ই আমরা খুলনার পথে ফিরতি যাত্রা করি। যদিও শেষ পর্যন্ত পটুয়াখালী পার হতে না হতেই বৃষ্টি আমাদের ভিজিয়ে দেয়। তবে কিছুক্ষণ পর তা আপনা আপনিই শুকিয়ে গিয়েছিলো। কারণ আমরা ৯০ থেকে ১০০+ কিমি/ঘণ্টা গতিতে ছুটছিলাম।

ফেরার সময় প্রাকৃতিক সৌন্দর্য দেখার লোভে আমরা যাত্রাপথ পরিবর্তন করেছিলাম। এবার আমরা বরিশাল-ঝালকাঠি-বেকুটিয়া ফেরিঘাট-বাগেরহাট-খুলনা পথ ধরে যাত্রা করি। কিন্তু আবারো বিধি বাম, যাত্রার একেবারে শেষ পর্যায়ে গিয়ে আবারো বৃষ্টি হানা দিলো! তবে এবার কিন্তু আমরা বৃষ্টির মাঝেই মজাদার স্ট্রিট ফুড খেয়ে নিলাম। যাহোক, অবশেষে রাত ৮টা ২৭ মিনিটে দীর্ঘ যাত্রা শেষে আমরা রূপসা ব্রিজে পৌঁছাই। এবং আনন্দচিত্তে বাড়ি ফিরে যাই।

প্রো রাইডারজের মুন্নার সঙ্গে একবার আমার (শুভ্র সেন) ভ্রমণের সুযোগ হয়েছিলো। সেবার আমরা সুন্দরবন গিয়েছিলাম। আশা করি, নিকট ভবিষ্যতে গোটা দলের সঙ্গেই দিনব্যাপী কোনো ট্যুরে যাওয়ার সৌভাগ্য হবে। ধন্যবাদ সাকিব ভাই, মুন্না ভাই ও সোহেল ভাইকে তাদের নিরাপদ ভ্রমণের জন্য। দোয়া করি, প্রো রাইডারজ সফলভাবে এগিয়ে যাক।

Published by Shuvo Bangla

Best Bikes

Honda CB Hornet 160R

Honda CB Hornet 160R

Price: 169800.00

Honda CB Hornet 160R ABS

Honda CB Hornet 160R ABS

Price: 255000.00

Honda CB Hornet 160R CBS

Honda CB Hornet 160R CBS

Price: 212000.00

View all Best Bikes

Latest Bikes

CFMoto 125NK

CFMoto 125NK

Price: 0.00

Liban Wind

Liban Wind

Price: 0.00

Liban Phoenix Plus

Liban Phoenix Plus

Price: 0.00

View all Sports Bikes

Upcoming Bikes

Liban Wind

Liban Wind

Price: 0.00

Liban Phoenix Plus

Liban Phoenix Plus

Price: 0.00

Liban Phoenix

Liban Phoenix

Price: 0.00

View all Upcoming Bikes