সুপারস্পোর্টস লার্নার ক্যাটাগরীতে কাওয়াসাকি ও কেটিএম মোটরসাইকেল সম্প্রতি বেশ সাড়ম্বরে প্রবেশ করছে। আর দুটো ব্র্যান্ডই একদম এন্ট্রি-লেভেলে নতুন দুটো মডেলের মোটরসাইকেল এনেছে। আর তাদের সেই ১২৫সিসির মোটরসাইকেলদুটোর কম্পারিজন রিভিউ নিয়ে আজ আমরা হাজির হয়েছি। আশাকরি আমাদের কাওয়াসাকি নিনজা১২৫ ভার্স কেটিএম আরসি১২৫ কম্পারিজন রিভিউ আপনাদের ভালো লাগবে।

সুপরস্পোর্টস লুক ও ডিজাইন

সম্প্রতি প্রায় সব মোটরসাইকেল ব্র্যান্ডই লার্নার সেগমেন্টে তাদের সুপারস্পোর্টস মডেলগুলোর রেপ্লিকা আনছে। আর ১২৫সিসির এন্ট্রি-ক্যাটাগরিটি সেইসাথে নানারকম চমকপ্রদ ফিচারের স্পোর্টসবাইকে সমৃদ্ধ হচ্ছে। আর এখানেই হয়েছে কাওয়াসাকি নিনজা১২৫ এবং কেটিএম আরসি১২৫ বাইকদুটির সর্বশেষ অভিষেক।

তো লুক ও ডিজাইনের ক্ষেত্রে, কাওয়াসাকি নিনজা ১২৫ মুলত: কাওয়াসাকির নিনজা ২৫০এসএল মডেলটার ট্রু-কপি। আর এই মডেলটির মোটামুটি একই ধরনের ফিচারই নিনজা১২৫ মডেলটিতে সমন্বয় করা হয়েছে।

ফলত: এতে একই ধরনের সিঙ্গেল হেডল্যাম্পের সাথে সাথে বিস্তৃত এ্যরোডাইনামিক প্যানেল রয়েছে। আর এর ফুয়েল-ট্যাঙ্ক, ওডোমিটার, স্পোর্টি স্প্লিট-সিট, একজস্ট, কম্প্যাক্ট টেইল-এন্ড সবই আইকনিক ডিজাইনের।

আর অপরদিকে কেটিএম আরসি১২৫ হলো আরসি২০০ এর মোটামুটি ক্লোন, যা কিনা সরাসরি আরসি৩৯০ এর ছায়ায় তৈরি। আর সেইভাবেই আরসি১২৫ মুলত: আরসি২০০ এর মোটামুটি সব ফিচারও স্টাইল ফলো করেছে।

সেই সূত্রে বাইকটি সেই একই আইকনিক ব্যাট-আই ড্যুয়াল প্রজেকশন-হেডল্যাম্প আর বিস্তৃত এ্যারোডাইনামিক বডি-প্যানেল ধারন করেছে। আর বাহ্যিক ডিজাইনের বাকি সবকিছুও একইভাবে ডিজাইন করা। তবে আরসি১২৫ এর কালার-স্কিম অবধারিতভাবেই আলাদা।

ফ্রেম, হুইল, ব্রেক, ও সাসপেনশন সিস্টেম

আমাদের আলোচিত দুটো মোটরসাইকেলেই ফ্রেম, হুইল, ব্রেক, ও সাসপেনশন সিস্টেম তাদের বেশি ক্ষমতার বাইকগুলো হতে সমন্বয় করা। তো দুটো বাইকেই তাদের উচ্চতর মডেলগুলোর মতো ট্রেলিস স্টিল-ফ্রেম রয়েছে। তবে তাদের ফ্রেম ডাইমনশনে কিছু ভিন্নতা রয়েছে।

কাওয়াসাকি নিনজা ১২৫ এর হুইলগুলো জোড়াকৃত ১০-স্পোক এ্যালয়-রিম ও টিউবলেস টায়ারযুক্ত। এর টায়ারগুলো সামনে ও পেছনে 100/80-17 ও 130/70-17 মাপের। আর অপরদিকে কেটিএম আরসি১২৫ এর চাকাও এ্যালয়-রিম ও টিউবলেস টায়ার যুক্ত। তবে এর রিম ডিজাইন আলাদা ১০-স্পোকযুক্ত ও টায়ারগুলো 110/70-17 ও 150/60-17 মাপের।

আর ব্রেকিং সিস্টেমের ক্ষেত্রে দুটো বাইকেই দুচাকায় রয়েছে হাইড্রলিক ডিস্ক ব্রেকিং-সিস্টেম। তবে আরসি১২৫ এর ব্রেক-ডিস্কগুলো নিনজা১২৫ হতে ১০মিমি বেশি চওড়া। আর সেইসাথে নিনজা১২৫ এ রয়েছে ড্রয়্যাল-চ্যানেল এবিএস আর আরসি১২৫ এ সিঙ্গেল-চ্যানেল এবিএস।

আর সাসপেনশনের ক্ষেত্রে নিনজা১২৫ এর সামনে রয়েছে ৩৭মিমি আপরাইট টেলিস্কোপিক-ফর্ক সাসপেনশন। সেইসাথে এর পেছনেরটা ইউনিট্র্যাক মনো-সাসপেনশন। আর এর সাসপেনশন ট্রাভেল সামনে ১১০মিমি ও পেছনে ১২০মিমি। তবে কেটিএম আরসি১২৫ এর সামনে রয়েছে ৪৩মিমি ইউএসডি ফর্ক-সাসপেনশন আর পেছনে মনো শক-এ্যাবজরবার। আর এর উভয় সাসপেনশনই ডাবলইউপি-সাসপেনশন. যাদের উভয়ের ট্রাভেল ১৫০মিমি।

রাইডিং ও কন্ট্রোলিং ফিচার

কাওয়াসাকি নিনজা১২৫ ভার্স কেটিএম আরসি১২৫ দুটো বাইকই বলা যায় তাদের উচ্চতর সুপারস্পের্টস মডেলের মিনিয়েচার। দুটো বাইকই প্রযোজ্য সুপারস্পের্টস ডিএনএ ও স্পোর্টস-রাইডিং প্রফাইল ও ইরগনোমিক্স সমৃদ্ধ।

আর তাদের রাইডিং প্রোফাইল মুলত: ট্র্যাক-ওরিয়েন্টেড ও এ্যাগ্রেসিভ মোডের। উভয়েরই রয়েছে বিস্তৃত উইন্ডশীল্ড সহ স্প্লিট-ক্লিপ-অন হ্যান্ডেলবার। উঁচু ফুয়েল ট্যাঙ্ক-টপ, স্পের্টি-স্প্লিট সিট ও কম্প্যাক্ট নেকেড টেইল।

দুটো বাইকের রাইডি মুলত: ট্র্যাক-স্পোর্ট রাইডিং মোডের হলেও নিনজা১২৫ এর রাইডিং ক্যারেক্টার আনেকটাই রিল্যাক্সড। তবে আরসি১২৫ এর রাইডিং তুলনামুলকভাবে অনেকটাই এ্যাগ্রেসিভ। আর সেইসাথে ওজনে নিনজা১২৫ আরসি১২৫ এর তুলনায় অনেকটাই হালকা।

তবে বাইক দুটোর ব্রেকিং ও সাসপেনশন ফিচারে বেশ কিছু ভিন্নতা থাকার ফলে তাদের রাইডিং কন্ট্রোলিং মোডও কিছুটা আলাদা। এই ক্ষেত্রে বাইক দুটোর ভিন্ন এবিএস সেটআপ, আবহাওয়া, ও সারফেস বিচারে দুটো বাইকেই অবধারিতভাবে আলাদা রাইডিং এক্সপেরিয়েন্স দেবে। তাই সবমিলিয়ে তাদের রা্ রাইডিং কন্ট্রোলিং অনেকটাই আলাদা।

কাওয়াসাকি নিনজা১২৫ ভার্স কেটিএম আরসি১২৫ – ইঞ্জিন পারফর্মেন্স ফিচার

কাওয়াসাকি নিনজা১২৫ ও কেটিএম আরসি১২৫ মোটরসাইকেল দুটোর ইঞ্জিন একদম একই ডিসপ্লেসমেন্টের। দুটো ইঞ্জিনই ৫৮.০মিমিX৪৭.২মিমি বোর ও স্ট্রোকের সিঙ্গেল-সিলিন্ডার, ফোর-স্ট্রোক, এয়ার-কুলড ওভার-স্কয়ার ইঞ্জিন।

আর উভয়েরই রয়েছে ডিওএইচসি ২-ভালভ ও ইলেকট্রনিক ফুয়েল ইন্জেকশন সিস্টেম। আর ৬-স্পিড গিয়ারের ইঞ্জিনদুটো ইলেকট্রিক-স্টার্ট ফিচার যুক্ত। তো সবমিলিয়ে দুটো ইঞ্জিনে অনেক ফিচারই কমন।

আর আরো মজার বিষয় হলো এদের পাওয়ার ও টর্ক ফিগারও মোটামুটি একই। নিনজা ১২৫ এ ইঞ্জিন পাওয়ার ডেলিভারি সর্বোচ্চ ১১কিলোওয়াট ও টর্ক ১১.৭এনএম। আর অপরদিকে আরসি১২৫ এ পাওয়ার আউটপুট ১১কিলোওয়াট ও টর্ক ১২এনএম।

তো দেখা যায় যে, দুটো বাইকের ইঞ্জিনের বিভিন্ন ফিচার ও সংখ্যাগত পারফর্মেন্স ফিগার মোটামটি একই। তবে অনেক ফিচারে পুথিগত মিল থাকলেও আশা করা যায় তাদের অন-রোড রিয়েল পারফর্মেন্সে পার্থক্য রয়েছে। কেননা তারা বাইকদুটো পুরোপুরি আলাদা ডিএনএ নিয়ে দুটো আলাদা ব্র্যান্ডের বাইক।

Kawasaki Ninja 125 VS KTM RC125 Specification Comparison

*All the specifications are subject to change upon company rules, policy, offer & promotion. BikeBD is not liable for the changes.

কাওয়াসাকি নিনজা১২৫ ভার্স কেটিএম আরসি১২৫ কম্পারিজন

তো বন্ধুরা, মোটামুটি এই ছিল কাওয়াসাকি নিনজা১২৫ ভার্স কেটিএম আরসি১২৫ কম্পারিজন রিভিউ এর আলোচনা। আর সেইসাথে বাইকদুটোর স্পেসিফিকেশন টেবিল পর্যালোচনার পর আশা করা যায় তাদের তুলনামুলক চিত্র আপনাদের কাছে অনেকটাই পরিস্কার। তবে সব মিলিয়ে আশার কথা যে ১২৫সিসি সেগমেন্টে আমাদের পছন্দ করার মতো আরো চমৎকার কিছু অপশন বাড়লো। তো আশা করা যায় সামনে আরো ভালো কিছু বাইক আমরা পাব। ধন্যবাদ।